নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই পর্দা পালন ইসলামে ফরজ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী, উভয়কেই পর্দা পালনের মাধ্যমে নিজেদের চরিত্র এবং মর্যাদা রক্ষা করতে হবে। পর্দা নারী এবং পুরুষের উন্নত রুচি ও সংযমের বহিঃপ্রকাশ। এটি পুরুষের চরিত্র গঠনে সহায়ক এবং নারীর সম্মান ও ইজ্জতের রক্ষাকবচ।
আল্লাহ তাআলা কুরআনে স্পষ্টভাবে নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য পর্দার আদেশ দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে নবী, আপনি মুমিন পুরুষদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত করে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। এটি তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয় আল্লাহ তাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবগত। এবং ঈমানদার নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। তারা যেন এমন কিছু সৌন্দর্য প্রকাশ না করে যা সাধারণত প্রকাশিত হয়, এবং তারা যেন তাদের ওড়না বক্ষদেশে ফেলে রাখে।’ (সুরা নূর: আয়াত ৩০-৩১)
নারী ও পুরুষের পর্দার স্বরূপ কী হবে, তা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস থেকেও স্পষ্টভাবে জানা যায়। হজরত উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণিত একটি ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যায়, এমনকি অন্ধ ব্যক্তির সামনে থাকলেও নারীদের পর্দার আদেশ পালন করা জরুরি। একবার দৃষ্টিহীন সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসলে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মে সালমা এবং মায়মুনা রাদিয়াল্লাহু আনহাদের পর্দার অন্তরালে যাওয়ার নির্দেশ দেন। উম্মে সালমা বললেন, “হে আল্লাহর রাসুল, তিনি তো দৃষ্টিহীন, আমাদের দেখতে পান না!” রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তোমরা কি তাকে দেখতে পাও না?” (আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ, তিরমিজি)
এই হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, নারী পুরুষের জন্য উভয়ের সামনে থাকাকালীন সময়ে পর্দা পালন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন পুরুষদের জন্য নারীদের সামনে অবাধে আসা-যাওয়া বৈধ নয়, তেমনি নারীদের জন্যও পুরুষদের সামনে বিনা পর্দায় উপস্থিত হওয়া বৈধ নয়।
সুতরাং, নারী ও পুরুষের জন্য পর্দা পালন সমানভাবে বাধ্যতামূলক। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে কুরআন ও হাদিসের আদেশ মেনে পর্দার গুরুত্ব উপলব্ধি করার এবং তার মাধ্যমে দুনিয়া ও পরকালে সফল হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।